top of page

Watch On youtube

মস্তিষ্কে বা ব্রেনে পানি জমা ও এর কারণে মাথা বড় হওয়াকে ইংরেজিতে বলে হাইড্রোকেফালাস। আমাদের মস্তিষ্কের গভীরে ভেন্ট্রিকল নামে এক ধরনের শূন্যস্থান আছে। যেখান থেকে সিএসএফ বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড নামের তরল পদার্থ তৈরি হয়। এক দিকে এই তরল মস্তিষ্কের ভেতর তৈরি হয়, অন্য দিকে তা রক্তে শোধিত ও নিষ্কাশিত হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

ফলে পূর্ণবয়স্ক মানুষের মগজে ১৫০ মিলি পরিমাণ সিএসএফ থাকে। যদিও প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ মিলিলিটার তৈরি হয়। অর্থাৎ বাকি অংশ রক্তে শোষিত হয়। কোনো কারণে এই তরলের চলার পথে যদি টিউমার হয় বা রক্তক্ষরণ হয় অথবা জন্মগতভাবে পথটি বন্ধ থাকে, তাহলে তরল ঠিকভাবে নিষ্কাশিত হতে পারে না। তখনই এই তরল জমে ও হাইড্রোকেফালাস হয়।

 চিকিৎসা

মাথার সিটি স্ক্যান করে রোগ নিশ্চিত করা সম্ভব। এ রোগের চিকিৎসার নাম হলো ভেন্ট্রিকুলো পেরিটোনিয়াল সান্ট এন্ডোস্কোপিক থার্ড ভেন্ট্রিকুলোস্টম। জন্মের পর শিশুর মস্তিষ্কে পানি জমা বা হাইড্রোকেফালাস সন্দেহ হলে দ্রুত একজন নিউরো সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জ্বর জনিত খিঁচুনি - ব্রেইনের ইনফেকশন ছাড়া যদি জ্বর হয়ে খিঁচুনি হয়, তাহলে এটা জ্বর জনিত খিঁচুনি । সাধারণত ৬ মাস - ৫ বছরের বাচ্চাদের এই ধরনের খিঁচুনি হয়ে থাকে।
কিন্তু ব্রেইনের ইনফেকশন হয়ে জ্বর হয়ে খিঁচুনি হলে সেটা জ্বর জনিত খিঁচুনি নয়। সেটা মেনিনজাইটিস বা মস্তিষ্কের প্রদাহের কারণে হতে পারে।

 জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সাধারণত যেসব জ্বরে মস্তিষ্কে প্রদাহ হয়, যেমন মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস, সেরেব্রাল ম্যালেরিয়ায় জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি থাকে। বেশ কিছু জিনগত সমস্যায় জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হতে পারে। তেমনই আগে থেকেই এপিলেপসি রোগে আক্রান্ত শিশুর জ্বর হলেও আগের নিয়ন্ত্রিত খিঁচুনি বেড়ে যেতে পারে।

তাই জ্বরের সাথে খিঁচুনি হলে কি কারণে এরকম হয়েছে এর সঠিক কারণ জানতে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 শিশু বয়সেও ব্রেন টিউমার হতে পারে। তবে ব্রেন টিউমারের কারণ এখনো অজানা। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এর হার কিছুটা বেশি। দুই ধরনের ব্রেন টিউমার দেখা যায়—

 প্রাইমারি: টিউমারের উৎপত্তি মগজেই হয়ে থাকে।

 সেকেন্ডারি: টিউমারের উৎপত্তিমূল থাকে শরীরের অন্য কোনো অংশে। পরবর্তী সময়ে ক্যানসার কোষ মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে টিউমার তৈরি করে।
প্রাইমারি ব্রেন টিউমার

এগুলো ব্রেনের অভ্যন্তরের যেকোনো কোষ থেকে উৎপন্ন হতে পারে। টিউমার নিরীহ প্রকৃতির বা ক্যানসার—দুই রকমই হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাইমারি ব্রেন টিউমার নিরীহ ধরনের হয়। এ টিউমার নিজস্ব স্থানে থাকে, অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ে না বা ব্রেনের অন্য অংশ ধ্বংস করে না।

 শিশু বয়সে দুটি প্রধান ব্রেন টিউমার হতে দেখা যায়—

গ্লাইওমা টিউমার: শিশু বয়সে এস্ট্রোসাইটোমা ও এবোনডাইমোমা—এ দুই শ্রেণির বেশি হতে দেখা যায়।

ব্রেন স্টেম: সেরিবেলাম থেকে ব্রেনের অন্যান্য অংশে বা মেরুদণ্ডের স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে যেতে পারে।

 লক্ষণঃ

 মাথাব্যথা, বমি, ঝিমানো ভাব, খিঁচুনি, পরবর্তী সময়ে জ্ঞান লোপ।

 অল্প বয়সী শিশুর মাথার আকার বাড়া।

ব্রেনের কোন অংশে টিউমার উৎপন্ন হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে অন্যান্য লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন সেরিবেলামে গজানো টিউমারের কারণে শিশু স্থিরভাবে সরলরেখা ধরে হাঁটতে পারে না।

শিশুর ডায়রিয়া কী?

সাধারণত পরিপাকতন্ত্রে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো পরজীবী সংক্রমণের ফলে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। দিনে তিন বার বা তার চেয়ে বেশি

বার ঘনঘন পাতলা পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া বলে ধরে নিতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া তীব্র হলে চাল ধোয়া পানির মতো পায়খানা নির্গত হয়।

শিশুর ডায়রিয়া হলে কী করবেন?

ডায়রিয়া হলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে যায় এবং শরীরে লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। এ দুটোকে রোধ করাই ডায়রিয়ার মূল চিকিৎসা।

প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর বয়স অনুযায়ী পরিমাণমতো খাবার স্যালাইন পান করাতে হবে।

জন্ম থেকে দুই বছর: ১০-২০ চা চামচ (৫০-১০০ মি.লি.)

দুই বছর থেকে ১০ বছর: ২০-৪০ চা চামচ (১০০-২০০ মি.লি.)

খাবার স্যালাইন ছাড়াও ঘরে তৈরি তরল খাবার যেমন ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, তাজা ফলের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

স্বাভাবিক খাবারও পাশাপাশি চালিয়ে যেতে হবে।

বুকের দুধ খাওয়া শিশুরা খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বুকের দুধও খাবে।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জিঙ্ক ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। এতে ডায়রিয়া তুলনামূলক কম সময়ে সেরে যাবে।

কিন্তু যদি পাতলা পায়খানার সঙ্গে রক্ত, জ্বর, প্রচণ্ড পেটব্যথা বা কামড়ানো, পিচ্ছিল মল, মলত্যাগে ব্যথা ইত্যাদি জটিল অবস্থা সৃৃষ্টি হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই নিরাপদ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, নিয়মিত নখ

কেটে পরিষ্কার রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন আর নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়ার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আমাদের দেশে একটি অতি প্রচলিত অভ্যাস হল আমরা ছোটদের কথার গুরুত্ব দিতে চাই না। কথায় কথায় প্রায়ই তাদের শুনতে হয় তুমি ছোট, তুমি কিছু বুঝ না। মনের অজান্তেই আমরা আমাদের শিশুদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিচ্ছি ।

তাই পরিস্থিতি বুঝে শিশুর মতামত এর গুরুত্ব দিতে হবে। মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনতে হবে।যদি তারা ভুলও হয়ে থাকে তবে সেটা তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। এতে করে শিশুর চিন্তাশক্তির সুন্দর বিকাশ ঘটবে ।

শিশুদের যে কোন সমস্যায় অবহেলা না করে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ এবং আন্তরিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

bottom of page